আসন্ন দুর্গাপূজার উৎসবকে কেন্দ্র করে ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী স্বাক্ষরিত আদেশে জানানো হয়, ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুর্গাপূজার আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করা হবে। অনুমোদিত সময়সীমা ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে ৫ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত। তবে রপ্তানির জন্য সরকারের কিছু শর্তাবলীরও উল্লেখ রয়েছে।
শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে – রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ অনুযায়ী নিয়ম মানা, শুল্ক কর্তৃপক্ষের পরীক্ষার মাধ্যমে অনুমোদিত পরিমাণের অতিরিক্ত রপ্তানি না করা, এবং অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান নিজে রপ্তানি না করে অন্যকে দিচ্ছে না তা নিশ্চিত করা। এছাড়া সরকার চাইলে যে কোনো সময় এই অনুমতি বাতিলের অধিকার সংরক্ষণ করেছে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের চাহিদা উল্লেখযোগ্য। গত পাঁচ বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রপ্তানি হওয়া ইলিশ বাংলাদেশের মোট উৎপাদনের মাত্র ০.২৯ শতাংশ। বরাবরের মতো, সরকার যে পরিমাণ অনুমোদন দেয়, তার চেয়ে কম ইলিশ বাস্তবে রপ্তানি হয়। উদাহরণস্বরূপ, গত বছর ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৮০২ টন।
ইলিশ রপ্তানির প্রথম অনুমতি দেওয়া হয় ২০১৯ সালে। সেবার প্রতিকেজি ৬ ডলার (বাংলাদেশে ৫০৭ টাকা) দরে প্রথম তিন চালান পাঠানো হয়েছিল। পরে দাম বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিকেজি ১০ ডলার পর্যন্ত হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৭৬ টন ইলিশ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল সাড়ে ৩৯ লাখ ডলার। এরপর ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৯৯ টন ইলিশ রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ২৩০ টন ইলিশ রপ্তানি হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৯১ টন এবং সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮০২ টন ইলিশ রপ্তানি হয়ে বাংলাদেশের আয় হয় ৮০ লাখ ডলার।
0 Comments