সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

ঋণের বোঝা টানতে না পেরে স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে আত্মহত্যা দিনমজুরের

রাজশাহীতে ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে কৃষক দিনমজুরের আত্মহত্যা

রাজশাহীর খড়খড়ি এলাকায় মর্মান্তিক এক ঘটনায় অভাব-অনটন ও ঋণের চাপে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল ইসলাম নামে এক কৃষক দিনমজুর। শুক্রবার সকালে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে দুই পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে মিনারুল উল্লেখ করেছেন, চরম দারিদ্র্য ও ঋণের চাপে তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন। নোটে আরও লেখা ছিল, “আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়” এবং মৃত্যুর পর তার বড় ভাইয়ের পরিবার যেন তাদের মুখ না দেখে বা জানাজায় অংশ না নেয়—এই অনুরোধও রেখে গেছেন তিনি।

প্রতিবেশীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে স্বাভাবিকভাবেই খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান মিনারুল, তার স্ত্রী মনিরা বেগম, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছেলে মাহিম ও দেড় বছরের মেয়ে মিথিলা। সুইসাইড নোট অনুযায়ী, রাতের কোনো একসময় মিনারুল প্রথমে স্ত্রী ও সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যা করেন এবং পরে অন্য ঘরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন।

শুক্রবার সকালে বারবার ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে মিনারুলের মা টিনের দরজা ফাঁক করে ছেলের মরদেহ ঝুলতে দেখে চিৎকার করেন। প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করলে অন্য ঘর থেকে তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে।

মিনারুলের পরিবার ও স্বজনরা জানান, তিনি খুবই ভালো স্বামী ও পিতা ছিলেন। দাম্পত্য জীবনে কোনো কলহ ছিল না। তবে দীর্ঘদিন ধরে এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তার শাশুড়ী জানান, স্বামী দুটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এবং প্রতি সপ্তাহের কিস্তি দেওয়াই তার জন্য দুঃসহ হয়ে উঠেছিল।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান জানান, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মনে হলেও ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। একইসঙ্গে ঘটনার পেছনের সব কারণ উদঘাটনে গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

এই ঘটনার পর গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে এই মর্মান্তিক পরিণতির খবর জানতে।

 

Post a Comment

0 Comments