সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

প্রতিদিন পান্তা ভাত খেলে শরীরের যে উপকার হয়




পান্তা ভাত: গ্রামীণ ঐতিহ্য থেকে পুষ্টিগুণে ভরপুর স্বাস্থ্যকর খাবার

বাংলার গ্রামীণ জীবনে পান্তা ভাতের জনপ্রিয়তা বহু পুরোনো। সকালে খাওয়ার জন্য এই সহজ ও সাশ্রয়ী খাবারটি ছিল একসময় গ্রামীণ পরিবারের অপরিহার্য অংশ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহুরে জীবনে ব্রেড, জ্যাম বা জেলির মতো খাবারগুলো পান্তা ভাতকে পিছিয়ে দিয়েছে।

তবে পান্তা ভাতের পুষ্টিগুণ জানলে শহুরে জীবনেও এর জনপ্রিয়তা বাড়তে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ জানিয়েছেন, পান্তা ভাত আসলে একটি প্রিবায়োটিক খাবার। এতে রয়েছে মাইক্রোফ্লোরা, যা অন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এছাড়া এটি ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সহায়ক।

শ্বেতার মতে, ভাত রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এর মধ্যে তৈরি হয় নানা পুষ্টিকর উপাদান যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যৌগ, ফেনোলিক্স, ভিটামিন ই ও লিনোলিক অ্যাসিড। এর ফলে পান্তা ভাত কোলেস্টেরল কমাতে, ডায়রিয়া প্রতিরোধে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

গবেষণায় দেখা গেছে, রাতারাতি পান্তা করা ভাতে আয়রনের পরিমাণ সাধারণ ভাতের তুলনায় ২১ গুণ বেশি হয়। এটি ক্লান্তি দূর করতে, অনিদ্রা কমাতে এবং শরীরের শক্তি জোগাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

পান্তা ভাত তৈরির প্রক্রিয়াও বেশ সহজ। আগের দিনের রান্না করা ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন লবণ মিশিয়ে খাওয়া হয়। এর সঙ্গে মাছ ভাজা, ডালের বড়া, ডিম ভাজা, ভর্তা কিংবা শুধু পোড়া মরিচ-পেঁয়াজ মিশিয়েই খাওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পান্তা ভাতে অতিরিক্ত পুষ্টি যোগ করতে চাইলে এর সঙ্গে শাকসবজি, বাদাম, ডাল কিংবা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন মুরগির মাংস যোগ করা যেতে পারে। এতে এটি আরও বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবারে পরিণত হবে।

একসময় গ্রামীণ জীবনের প্রতীক হিসেবে পরিচিত এই খাবারটিই এখন পুষ্টিগুণে ভরপুর আধুনিক স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments