ব্রেইন ডেড নারীর গর্ভে ৪ মাস ধরে সন্তান বাঁচিয়ে জন্ম দিলেন চিকিৎসকরা
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ঘটেছে এক অদ্ভুত ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। ব্রেইন ডেড ঘোষিত এক নারীর গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশু শেষ পর্যন্ত নিরাপদে জন্ম নেয়। নারীর মৃত্যুর পরও গর্ভের শিশুকে বাঁচাতে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নারীর মস্তিষ্কের সব কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পরও গর্ভের শিশু জীবিত থাকায় চার মাস ধরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এতে তার হৃদস্পন্দন ও শ্বাস-প্রশ্বাস কৃত্রিমভাবে সচল রাখা সম্ভব হয়।
ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছিল
ঘটনাটি ঘটেছিল এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ৩০ বছর বয়সী অ্যাড্রিয়ানা স্মিথ, যিনি একজন নার্স, হঠাৎ প্রচণ্ড মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়ি পাঠানো হলেও পরদিন সকালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ফের হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে।
চিকিৎসা শেষে ধরা পড়ে, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় তার অবস্থা দ্রুত অবনতিতে চলে আসে। চিকিৎসকরা ঘোষণা দেন, অ্যাড্রিয়ানা ব্রেইন ডেড, অর্থাৎ মস্তিষ্কের সব কার্যক্রম চিরতরে বন্ধ।
গর্ভের শিশুকে বাঁচানোর প্রয়াস
সাধারণত ব্রেইন ডেড হলে লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করে মৃতদেহ পরিবারের হাতে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু অ্যাড্রিয়ানা তখন আট সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের অপেক্ষায় ছিলেন।
জর্জিয়ার আইন অনুযায়ী, গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃদস্পন্দন শুরু হলে মা মারা গেলেও ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভের প্রাণ থামানো বেআইনি। তাই চিকিৎসকরা গর্ভের শিশুকে বাঁচাতে চার মাস ধরে লাইফ সাপোর্ট চালু রাখেন এবং অবশেষে শিশুটি নিরাপদে জন্ম নেয়।
এই ঘটনাটি চিকিৎসা ও আইনের এক অনন্য সংমিশ্রণ হিসেবে বিশ্বজুড়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
0 Comments