সাপ নিয়ে প্রচলিত মিথ ও বৈজ্ঞানিক সত্য
সাপকে ঘিরে নানা কল্পকাহিনি প্রচলিত রয়েছে। বিশেষ করে সাপের মাথায় মণি থাকার ধারণাটি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মো. ফজলে রাব্বি জানান, সাপের মাথায় মণি থাকার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি বলেন, “সাপ যখন খোলস বদলায়, তখন মাথার অংশ আগে পরিবর্তিত হয়। এই সময় যদি কারও চোখে খোলস আটকে থাকতে দেখা যায়, সেটি চকচকে মনে হতে পারে। এখান থেকেই মণির গল্পের উৎপত্তি।”
বিনের শব্দে কি সাপ নাচে?
সাপুড়েরা সাপ খেলা দেখানোর সময় বিন বাজালেও সাপের শোনার ক্ষমতা নেই। গবেষকদের মতে, সাপ শব্দ নয়, বরং সাপুড়ের শরীরের নড়াচড়া লক্ষ্য করে প্রতিক্রিয়া জানায়। তাই একে নাচ নয়, আত্মরক্ষামূলক আচরণ বলা যায়।
সাপ কি প্রতিশোধ নেয়?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাপের স্মৃতিশক্তি মানুষের মতো উন্নত নয়। ফলে কোনো সাপকে মেরে ফেললে তার সঙ্গী প্রতিশোধ নিতে আসে—এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
সাপ সম্পর্কে ভুল ধারণার প্রভাব
বাংলাদেশে প্রায় ৯৪ প্রজাতির সাপ রয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই বিষহীন। কিন্তু ভীতি ও ভুল ধারণার কারণে মানুষ সাপ দেখলেই মেরে ফেলে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, “বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতার অভাবের কারণে সাপের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠেছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সাপের মাথায় মণি থাকা, বিনের শব্দে নাচা কিংবা প্রতিশোধ নেওয়ার মতো ধারণাগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। সচেতনতা বাড়লে সাপের মতো পরিবেশবান্ধব প্রাণী রক্ষা পাবে, যা প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
0 Comments