সমবয়সী দম্পতির বিয়ে
একসময় সমাজে স্বাভাবিক বিষয় ছিল স্বামীর বয়স স্ত্রীর দ্বিগুণ হওয়া। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে শিক্ষিত সমাজে কম বয়সের ব্যবধানের বিয়ের প্রবণতা বেড়েছে। বিয়ে এখন কেবল সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে নয়; বরং সমমনা জীবনসঙ্গী খোঁজা, একসঙ্গে পড়াশোনা বা চাকরির মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে ওঠাই নতুন বাস্তবতা।
তবে সমবয়সী বিয়ের ক্ষেত্রেও দেখা দেয় নানা জটিলতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাত্রীর তুলনায় পাত্রের বয়স অন্তত ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে হওয়া উচিত। কারণ, সমবয়সী সম্পর্ক অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে ব্যক্তিত্বের সংঘাত সৃষ্টি করে। পুরুষরা কর্তৃত্ব ফলাতে চাইলে এবং নারীরা সচেতন ও পরিণত মনোভাব নিয়ে এগোতে চাইলে তৈরি হয় মতবিরোধ।
অভিজ্ঞরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের তুলনায় দ্রুত পরিণত হয়। তাই সমবয়সী দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক ভ্রাতৃতুল্য মনে হতে পারে, আবার ‘দিদিগিরি’-র অভিযোগে শুরুও হতে পারে অশান্তি। যৌথ জীবনে একে অপরের চিন্তাধারাকে সম্মান না করলে দ্রুত সম্পর্ক ভাঙনের দিকে যায়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বয়সের টার্নিং পয়েন্ট। ৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়সে নারীরা শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যার মুখোমুখি হন—হরমোনের পরিবর্তন, ক্যালসিয়ামের অভাব, মাতৃত্বের ক্ষমতা হারানো ইত্যাদি। এসব কারণে সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়ে। অনেক নারী তখন নিজেকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকেন।
তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে। অনেক সমবয়সী দম্পতি সুখী দাম্পত্য গড়ে তুলতে সক্ষম হন। তারা সমানভাবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ও জীবনের চ্যালেঞ্জ ভাগাভাগি করে নেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সের ব্যবধান যতই থাকুক, দাম্পত্য টিকে থাকার মূল চাবিকাঠি হলো পারস্পরিক সম্মান, সমঝোতা আর বোঝাপড়া।
0 Comments