রিজিকের বরকত কমে যাওয়া শুধু আর্থিক সমস্যার বিষয় নয়, বরং আধ্যাত্মিক এক সংকটও বটে। কোরআন ও হাদিসে এমন কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, যা মানুষের রিজিক সংকীর্ণ করে দেয়।
উদাসীনতা:
আল্লাহর জিকির থেকে উদাসীন হওয়া রিজিকের বরকত কমিয়ে দেয়। যারা দুনিয়ার মোহে পড়ে আল্লাহকে ভুলে যায়, তাদের অন্তরে শয়তান প্রভাব বিস্তার করে। ফলে তারা অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয় এবং অর্থ-সম্পদ থেকেও শান্তি হারায়। কোরআনে বলা হয়েছে—
"হে মুমিনগণ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে। আর যারা এরূপ করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।" (সুরা মুনাফিকুন: ৯)
সুদ:
সুদ মানবতার জন্য ধ্বংসাত্মক। কোরআনে সুদখোরদের আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
"হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমাদের যে সুদ বাকি আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা ঈমানদার হও। যদি তা না করো তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।" (সুরা বাকারা: ২৭৮-২৭৯)
রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে জাতির মধ্যে সুদ প্রসারিত হয় তারা দুর্ভিক্ষে পতিত হয়।” (মুসনাদে আহমাদ)
অকৃতজ্ঞতা:
আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করাও রিজিক কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। কোরআনে আল্লাহ বলেন—
"যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব। আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে আমার শাস্তি কঠোর।” (সুরা ইবরাহিম: ৭)
গুনাহ:
গুনাহ ঈমান দুর্বল করে এবং রিজিক সংকীর্ণ করে দেয়। আল্লাহ বলেন—
"যদি জনপদগুলোর অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি আসমান ও জমিন থেকে তাদের জন্য বরকতসমূহ উন্মুক্ত করতাম।" (সুরা আরাফ: ৯৬)
রাসুল (সা.) বলেছেন— “মানুষ তার পাপের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকেও বঞ্চিত হয়।” (ইবনে মাজাহ: হাদিস ৪০২২)
বিশেষজ্ঞদের মতে, রিজিকের প্রকৃত বরকত শুধু টাকার অঙ্কে নয়, বরং শান্তি, সুস্থতা ও কল্যাণে নিহিত। তাই আল্লাহর ওপর দৃঢ় ঈমান, সুদ থেকে বিরত থাকা, শুকরিয়া আদায় ও গুনাহ পরিহার করা—এগুলোই রিজিকের প্রকৃত বরকত আনে।
0 Comments